বাঙ্গালীর বার্তা: নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে জয়ী হয়ে এবং নির্বাচন কমিশন থেকে গেজেট প্রকাশ সত্ত্বেও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে এখনও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি— এমন অভিযোগে তার সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন।
বুধবার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়, যা এখনও চলছে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বৈধ মেয়র। এরপরও কেন তাকে এখনও শপথ করানো হয়নি, তার ব্যাখ্যা চাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মশামুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত ঢাকা গড়তে ইশরাকের মতো জনবান্ধব মেয়র প্রয়োজন।
বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যতদিন ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো না হবে, ততদিন তারা নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘২০২০ সালের নির্বাচনে ইশরাক প্রকৃত বিজয়ী ছিলেন। কিন্তু সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা দেয়। এখন আদালতের রায়ে প্রমাণ হয়েছে ইশরাকই বৈধ মেয়র। তবুও তাকে শপথ করানো হচ্ছে না—এটা খুবই সন্দেহজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একজন বৈধ মেয়রের শপথ চাইছি, ভুল কিছু না। আজকের মধ্যেই যদি শপথ না করানো হয়, আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২২ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়ে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালের রায় পাঠায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মতামত না আসায় ২৭ এপ্রিল ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
৩০ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনার জানান, আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতেই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। পরে নির্বাচন কমিশন জানায়, তারা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে না। তবে গেজেট প্রকাশের দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ইশরাক হোসেন এখনো শপথ নিতে পারেননি। কারণ, শপথ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের, যারা এখনও শপথ আয়োজন করেনি।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির শুরুর পর ২০২০ সালের ১৬ মে শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেন। জুনের প্রথম সপ্তাহে হয় প্রথম বোর্ড সভা। সে অনুযায়ী, এ মেয়রের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের (২০২৫) জুনে।