বাঙ্গালীর বার্তা: বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘১৭ বছরের ষড়যন্ত্র ছিল একপক্ষীয়, কিন্তু হাসিনা পালানোর পর এখন অন্য ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। তেমনটি এখন নেই। কেউ বলছে সংস্কার, কেউ বলছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে খুলনা বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে দলের সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচিত জাতীয় সংসদ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব না। সংবিধানের জনবিরোধী ধারা নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে। দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, তারা কথা বলতে চায়। ১৭ বছর যা ছিল তা গণতন্ত্র বলা যায় না, ফ্যাসিবাদের উদাহরণ হয়েছে।স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সুতরাং একটি সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক, অবাধ নির্বাচন সমস্যার সমাধান করতে পারবে। গণতান্ত্রিক ধারাই সকল সংস্কার কাজ করতে পারবে। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ হবে, তারাই ইউনূস সাহেরে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আগে আমাদের কঠিন সময় পার করতে হবে। সদস্য পদ সংগ্রহ ও নবায়নের মাধ্যমে এ কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। ’

সীমান্তে মানবিক করিডর দেওয়ার মাধ্যমে অস্ত্র চালানের রুট হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘করিডরের মাধ্যমে অস্ত্র যাবে। আরাকান আর্মিরা শক্তিশালী হবে। আমাদের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে। হাসিনার সময় তো এমন করিডরের কথা আসেনি। তাহলে সংশয় আছে। তবে আমরা সন্দেহ করতে চাই না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাই না। নির্বাচনের কথা বললে তারা সময় লাগবে বলছেন। কত সময় লাগবে। জুন না ডিসেম্বর, পরিষ্কার করে বলুন। ‘

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণ কাকে ক্ষমতায় বসাবে জানি না। ড. ইউনূস! আপনার চালাকি সবাই বোঝে, আপনি বোঝেন না।’

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা স্বাধীনতা অস্বীকার করছে বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মুল চেতনাবোধ। আর জামায়াত এটাকে বলে পাকিস্তান ভাগ, এটা তাদের ঔদ্ধত্য।’

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম, সদস্যসচিব মোজাফফর আলম, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ পলাশ, সদস্যসচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নড়াইল জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ মজিদ, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, সদস্যসচিব কামরুল ইসলাম, মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন, খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, বিএনপি কেন্দ্রীয় সদস্য তরিকুল ইসলাম পিঞ্জিং, মোমরেজুল ইসলাম, সৈয়দা নার্গিস আলী প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। প্রধান অতিথি খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন ও পাঁচ জন তরুণ সদস্যের ফরম পুরণের মধ্য দিয়ে খুলনা বিভাগীয় সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।