বাঙ্গালীর বার্তা: পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শেখ মেহেদী আর জাকের আলীর লড়াকু জুটিতে ভর করে ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করতে সক্ষম হয় টাইগাররা। এরপর বাংলাদেশের দেয়া ১৩৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১৯ ওভার ২ বল খেলে ১২৫ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ফলে ৮ রানে জয় পায় বাংলাদেশ দল।
পরপর দুই ম্যাচ জয়ের ফলে সিরিজ জিতে নেয় টাইগাররা। ফলে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে শোকের দিনে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে লেখা হলো নতুন ইতিহাস। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে প্রথমবারের মতো রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের দেয়া ১৩৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শেখ মেহেদী প্রথম ওভার বল করতে এসে শেষ বলে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। পারভেজ ইমন ডিপ পয়েন্টে ডাইভ দিয়ে বল থামান, রিশাদ হোসেন করে থ্রো। স্টাম্প ভাঙেন লিটন। সাইম আইয়ুব ফেরেন ১ রান করে।
পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত সুইংয়ে এলবিডব্লিউ হন মোহাম্মদ হারিস, গোল্ডেন ডাকে। আম্পায়ার আঙুল তুলে দিলে রিভিউ নিয়েছিলেন হারিস। কাজের কাজ হয়নি। ৯ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
গত ম্যাচে পাকিস্তানের হাল ধরা ফখর জামানও এবার পারেননি। শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন তিনি (৮ বলে ৮)। লেগ সাইডে ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক লিটন। ১৪ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন পাকিস্তানের।
পঞ্চম ওভারে টানা দুইটি বলে দুর্দান্ত বাউন্সারে ব্যাটারদের পরাস্ত করেন তানজিম সাকিব। হাসান নেওয়াজ আর মোহাম্মদ নওয়াজ-দুই ব্যাটারই উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ০ রানে। দলীয় ১৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে পাকিস্তান।
এরপর টিকে থাকার চেষ্টা করেন অধিনায়ক সালমান আগা। ২৩ বল খেলে অবশেষে ধৈর্য হারান। ইনিংসের দশ ওভারে শেখ মেহেদীকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ক্যাচ হন সালমান।
রিশাদ হোসেনের করা পরের ওভারে আউট হতে পারতেন ফাহিম আশরাফ বা খুশদিল শাহ। ফাহিমের পায়ে বল লাগলে আঙুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন ফাহিম। দেখা যায় বল স্টাম্পের ওপরে।
এক বল পর রিভার্স সুইপ করেন খুলদিল শাহ। এবার ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন পারভেজ ইমন। ১১ রানে জীবন পান খুশদিল। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। শেখ মেহেদী পরের ওভারেই এলবিডব্লিউ করে দেন খুশদিলকে (১৮ বলে ১৩)।
শেষদিক আব্বাস আফ্রিদি আর ফাহিম আশরাফের ব্যাটে আশা দেখছিল পাকিস্তান। ১৩ বলে ১৯ করা আব্বাসকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তবে ফাহিম আশরাফ দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তার প্রতিরোধ ভাঙেন রিশাদ। ৩২ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ফাহিম করেন ৫১।
বাংলাদেশের শরিফুল ১৭ রানে ৩টি এবং শেখ মেহেদী ও তানজিম হাসান সাকিব নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। সেই বিপর্যয় থেকে শেখ মেহেদী আর জাকের আলীর লড়াকু জুটি। মেহেদী ৩৩ করে আউট হলেও জাকের আলী দলকে টেনে নিয়েছেন শেষ পর্যন্ত। ছক্কা মেরে ফিফটি পূরণ করা জাকেরের ব্যাটে চড়েই সম্মানজনক পুঁজি পর্যন্ত গেছে বাংলাদেশ। ইনিংসে শেষ বলে ১৩৩ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।
পাকিস্তানের সালমান মির্জা, আহমেদ দানিয়েল আর আব্বাস আফ্রিদি নেন দুটি করে উইকেট।
এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে জিতে নেয় বাংলাদেশ।