বাঙ্গালীর বার্তা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশে যেন কোনো চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্য হতে না পারে, সেটি আমাদের প্রত্যাশা ও লক্ষ্য। দেশে জবাবদিহি অবস্থা তৈরি করতে নির্বাচন একান্ত প্রয়োজন। এ দেশের মালিকানার একমাত্র দাবিদার সব নাগরিক। এই সত্য যদি প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, ভোটাধিকারের প্রশ্নে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, বাকস্বাধীনতার পক্ষে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গতকাল রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, আমরা যদি জবাবদিহি অবস্থা করতে সক্ষম হই, এখানে আপনারা কবি-সাহিত্যিকরা লেখার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। মতপার্থক্য তুলে ধরা, সমালোচনার কথা বলেছেন। আমরা সেই অধিকারগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, যদি একটি জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হই। সেটি একমাত্র করা সম্ভব মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সব শহীদের রক্তের দায় পরিশোধের সময় এসেছে আজ।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বিএনপি মিডিয়া সেলের আয়োজনে কবিতা পরিষদের কবি ও সাহিত্যিকদের সঙ্গে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। পরিষদের পক্ষ থেকে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতে কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। কবি-সাহিত্যিকরা তাদের লেখার স্বাধীনতার কথা বলেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইদানীং জাতীয় সনদ নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। চার্টার্ড অব কালসারের কথা বলছেন। আপনারা যখন এই চার্টার্ড প্রণয়ন করতে পারবেন, জনগণ যদি আমাদের ক্ষমতায় দেয় বা রাখে; তখন আমরা এই নিয়ে চর্চা করতে পারব কতটুকু বাস্তবায়ন করা যায়। এ সময় কবিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন আর আগুন নিয়ে বয়ান হবে না। এখন বয়ান হবে ফুলের সৌরভ, মানুষের অধিকারের সৌরভ ও গণতন্ত্রের সৌরভ নিয়ে।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান বলেন, পতিত শেখ হাসিনার আমলে গণমাধ্যমে আমাদের কবিতা প্রকাশ করেনি। কবিরা ক্ষমতার ভাগ চায় না, মানুষের অধিকার চায়। কবিরা মনে করে মানুষের ভালোবাসা তার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। এ সময় পরিষদের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, বাধা আছে, বিপত্তি আছে; তবুও আমার বিশ্বাস- এর মধ্যেই নির্বাচন হবে, গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হবে। তিনি বলেন, এমন কিছু দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, কিংবা এখনও ঘটছে; নারী জুলাইয়ের মিছিলে ছিল পুরুষের পাশাপাশি, রাজপথে লড়াই করেছে- আজকে বিভিন্ন জায়গায় তাদের নাজেহাল করা হয়েছে, হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। এখনও কোনো কোনো জায়গায় ধর্মের অবমাননার অজুহাত তুলে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। এমনকি মাজারেও হামলা হয়েছে। এটা কীসের আলামত?
আবু সাঈদ খান আরও বলেন, যদি কখনও কলম দিয়ে আপনার (তারেক রহমান) সমালোচনা করি, তখন আপনি রুষ্ট হবেন না; বরং আমার সেই স্বাধীনতা নিশ্চিত করবেন, সেটাই প্রত্যাশিত। যদি কোনো লেখা প্রকাশিত হয়, সেই লেখা এবং সেই লেখকের নিরাপত্তা বিধান করাও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অংশ। রাজনৈতিক নেতৃত্ব হিসেবে সেটি করবেন- এই প্রত্যাশাই রাখতে চাই।
কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কবি নুরুল ইসলাম মনি, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমীন, কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা কবি মতিন বৈরাগী, সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন, সহসভাপতি কবি অনামিকা হক লিলি, কবি এবিএম সোহেল রশীদ প্রমুখ।