1. bangalirbarta@gmail.com : বাঙ্গালীর বার্তা : বাঙ্গালীর বার্তা
  2. info@www.bangalirbarta.com : বাঙ্গালীর বার্তা :
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

বিদ্রোহী কবির পাশে সমাহিত হলো ওসমান হাদি

তৌফিক ই ইলাহি বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

বাঙ্গালীর বার্তা: জুলাইযোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে দাফন করা হয়েছে।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ২০মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা হয়। এতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও তার দলের নেতাকর্মীসহ লাখ লাখ মানুষ।

জানাজার আগে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মাথা নত নয়, বরং উঁচু রেখে দাঁড়ানোর সাহস ও নির্ভীক জীবনের জয়গান গেয়ে গেছেন শরিফ ওসমান হাদি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন সবার বুকে থাকবে ওসমান হাদি।”

তিনি বলেন, “লাখ লাখ মানুষ হাদির কথা শোনার জন্য এসেছে। আমরা ওসমান হাদিক বিদায় দিতে আসিনি। তিনি আমাদের বুকের মধ্যে আছে ও থাকবে।”

জানাজা শুরুর আগে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, “সারা দেশ আজ কাঁদছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ হাদির জন্য সারা দেশে মসজিদগুলোতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

এ সময় তিনি হাদির জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন এবং তার জন্য দোয়া করেন।

শনিবার সকালে শাহবাগে কবর খননের কাজ শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।

এর আগে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আনা হয় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। হাদির পরিবারের সদস্য, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রয়েছে।

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় বন্দুকধারীরা শরিফ ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ওই রাতেই সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে লাল-সবুজের কফিনে মোড়ানো হাদির মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

শরিফ ওসমান হাদি ১৯৯৩ সালে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন মাদ্রাসা শিক্ষক, যার আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষা হাদির জীবন গঠনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি কনিষ্ঠতম।

ওসমান হাদির শিক্ষা জীবনের ভিত্তি গড়ে ওঠে ঝালকাঠির বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসায়। সেখান থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করে তিনি উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান ঢাকায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অনার্স মাস্টাস করেন।

ছাত্রজীবন শেষ করার পর হাদি জ্ঞান বিতরণের মহান পেশা শিক্ষকতাকে বেছে নেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি একটি স্বনামধন্য কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

শরিফ ওসমান হাদি এক সন্তানের জনক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট