বাঙ্গালীর বার্তা: ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে জমে উঠেছে বেচাকেনা। আজ ধোলাইপাড় হাটে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতার সরব উপস্থিতি। বিক্রি হচ্ছে মূলত ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরু। দাম নিয়েও সন্তুষ্ট অধিকাংশ ক্রেতা।
বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর ধোলাইপাড় পশুর হাটে (সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশে) গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে পাশের খোলা জায়গা, দয়াগঞ্জ, এমনকি ইট-বালু রাখার জায়গাতেও ত্রিপল টাঙিয়ে পশু রাখা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা খামারি ও ব্যবসায়ীরা এসব ছাউনির নিচে গরু বেঁধে রেখেছেন। মূল ফটকে ক্রেতাদের ভিড়; কেউ গরু কিনে হাট ছাড়ছেন, আবার কেউ পছন্দসই পশু খুঁজছেন।
মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি
বেলা ৩টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা হাট ঘুরে দেখা যায়, শতাধিক ক্রেতা গরু কিনে হাট ছাড়ছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছোট ও মাঝারি গরু বেছে নিয়েছেন। এসব গরুর দাম ৭২ হাজার থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে।
রাজধানীর টিপু সুলতান রোডের বাসিন্দা মেসবাহ উল্লাহ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় একটি মাঝারি গরু কেনেন। তিনি বলেন, বিক্রেতা শুরুতে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা চাইছিলেন। আমি বলি দেড় লাখ। পরে দরকষাকষি করে ১ লাখ ৬০ হাজারে কিনে ফেলি। গরুটাও পছন্দ হয়েছে।
জুরাইনের বাসিন্দা হাজী আবদুস সামাদ হাট থেকে ৩০ হাজার টাকায় একটি বাদামি রঙের খাসি কেনেন। তার ভাষায়, “দামটা যেমন হওয়ার কথা, তেমনই পেয়েছি। হাটে ঢুকেই খাসিটি পছন্দ হয়, দেরি করিনি।”
বিক্রেতারা সন্তুষ্ট
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা করিম মোল্লা নামে এক গরু ব্যবসায়ী বাঙ্গালীর বার্তাকে জানান, তিনি রবিবার রাতে হাটে পৌঁছান এবং মোট ৪০টি গরু এনেছেন। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তিনি ছয়টি গরু বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে দুটি ৯৫ হাজার, দুটি ১ লাখ ৩০ হাজার, একটি ১ লাখ ৫০ হাজার এবং একটি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, এই হাটে মাঝারি গরুরই চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বড় গরুর দরকার হলে অনেকে গাবতলীর দিকে যান। তবে এখন পর্যন্ত বিক্রি মন্দ নয়।
ধোলাইপাড় পশুর হাটের ইজারাদার প্রতিনিধি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আজ আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন মাঝারি গরুতে। এবার আমরা হাটের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিয়ে খুবই সতর্ক। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত জায়গার বাইরে যেন হাট না ছড়ায়, সে ব্যাপারে তদারকি চলছে।”
তিনি আরও জানান, হাটে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টিম গঠনের মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। হাটে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মোবাইল টয়লেট রাখা হয়েছে।
হাট এলাকায় দায়িত্বরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এসআই মাহবুবুর রহমান বলেন, হাটে প্রবেশ ও বাহির পথ মনিটরিংয়ে আমাদের টহল টিম রয়েছে। এছাড়া ছিনতাই বা প্রতারণা ঠেকাতে সিভিলে পুলিশ সদস্যও কাজ করছেন। এখনো পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও জানান, হাট চলাকালীন সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। যানজট এড়াতে ট্রাফিক পুলিশকেও বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বেশ কয়েকজন খামারি ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর পশুর খাবার ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম কিছুটা বেশি হলেও তা অতিরিক্তনয়। হাটের দ যদি এভাবে বিক্রি হয়, তবে মূল ঈদের আগের দুদিনে চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।