আন্তর্জাতিক বার্তা: নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি বিতর্কিত ভিডিও পোস্ট করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় রোববার (২০ জুলাই) প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যায়, হোয়াইট হাউসে গিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে গ্রেপ্তার করছে এফবিআই। পরবর্তী দৃশ্যে কমলা কালারের পোশাকে জেলখানায় দেখা যায় ওবামাকে।
সোমবার (২১ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ট্রাম্পের শেয়ার করা ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, জো বাইডেনসহ কয়েকজন শীর্ষ রাজনীতিক বলছেন— “আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।” আর বারাক ওবামার মুখে শোনা যায়— “বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট আইনের ঊর্ধ্বে।”
এরপর ভিডিওতে ওভাল অফিসে ট্রাম্প ও ওবামার একটি দৃশ্য দেখানো হয়— যেখানে কিছুক্ষণের মধ্যেই এফবিআই এসে ওবামাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। সবশেষে ওবামাকে কারাগারে বন্দি অবস্থায় দেখা যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্ট করা এ ভিডিওটি আদতে এআই-নির্ভর। এই এআই ভিডিও এমন এক সময়ে সামনে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড দাবি করেছেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে রাশিয়ার প্রভাব সম্পর্কিত গোয়েন্দা তথ্য ‘জাল ও বিকৃত’ করা হয়েছিল ওবামা প্রশাসনের সময়েই।
গ্যাবার্ড বলেন, ১১৪ পৃষ্ঠার একটি ইমেইল নথি (যার অনেক অংশ কালো করে দেওয়া হয়েছে) থেকে জানা গেছে, ওবামা প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ইচ্ছাকৃতভাবে গোয়েন্দা বিশ্লেষণ বিকৃত করেছিল, যাতে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক তুলে ধরা যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) তিনি লেখেন, তাদের লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হটানো এবং আমেরিকান জনগণের ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য করা। এ চক্রান্তে জড়িত যত বড় ক্ষমতাবানই হোক না কেন, সবাইকে তদন্তের আওতায় এনে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের প্রজাতন্ত্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি রক্ষার জন্য এটাই জরুরি।
গ্যাবার্ড আরও জানান, এসব দলিল বিচার বিভাগের কাছে ফৌজদারি তদন্তের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। ট্রাম্পও এই উদ্যোগের প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘তুলসি গ্যাবার্ডকে অভিনন্দন! চালিয়ে যাও!!!’
এদিকে ট্রাম্পের পোস্ট করা ভিডিওটি প্রকাশের পরপরই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকেই জানতে চান, সত্যিই বারাক ওবামা গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন কিনা।
একজন লিখেছেন, ‘অ্যারেস্ট ওবামা ট্রেন্ড করছেন? সত্যিই ওবামাকে গ্রেপ্তার করা হবে, আপনারা তাই ভাবছেন?’ আরেকজন বলেন, ‘এটা কি বাস্তব? ওবামাকে কি সত্যিই গ্রেপ্তার করা হতে পারে?’
মূলত ট্রাম্পের পোস্ট করা ভিডিওটি সম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি। এতে ব্যবহৃত সব ফুটেজ, কণ্ঠস্বর ও মুখাবয়বের অভিব্যক্তি ডিজিটালভাবে বানানো। ভিডিওটি বাস্তব নয় এবং ওবামার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের হয়নি।
এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন ভিডিও তৈরি বর্তমানে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ভিডিও বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, যার ফলে জনমত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে এসব ভিডিও দেখার আগে এর সত্যতা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।