বাঙ্গালীর বার্তা: পাবনার ঈশ্বরদীতে বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোল হয়েছে। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে মারধর করেন স্থানীয় কয়েকজন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ঈশ্বরদী শহরের আলহাজ মোড়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় স্তম্ভ’ প্রাঙ্গণে ঘটনাটি ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঈশ্বরদীতে ‘ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা’দের পক্ষ থেকে আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে আলহাজ মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় স্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সদরুল হক সুধা। শ্রদ্ধা জানানোর পরপরই উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ বলে কয়েকবার স্লোগান দেন।
বিজয় স্তম্ভের সামনে সারিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল হক সুধা ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার বাদশা ছিলেন। স্লোগানের শেষের দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল হক, আবুল বাশারসহ অন্যরা ‘জয় বাংলা’ বলে কয়েকবার স্লোগান দেন। চলে যাওয়ার সময় সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে উপস্থিত কিছু লোক মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের হট্টগোল শুরু হয়। বী মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজনের নাম উচ্চারণ করে তাদের খুঁজতে থাকেন স্থানীয়রা। একপর্যায়ের মনোয়ার হোসেন নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে কিল-ঘুষি মারেন তারা।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ঈশ্বরদী অঞ্চলের কোম্পানি কমান্ডার কাজী সদরুল হক সুধা বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা স্লোগান দিতেই পারে। জয় বাংলা স্লোগান তো আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের স্লোগান না। আওয়ামী লীগ নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে এই স্লোগানটি ব্যবহার করেছে। এই স্লোগান মুক্তিযোদ্ধাদের স্লোগান। বিজয়ের স্লোগান দেওয়ার পর কতিপয় ব্যক্তি আমাদের একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে লাঞ্ছিত করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।”
কারা হামলা চালিয়েছে জানতে চাইলে সদরুল হক সুধা বলেন, “কারা এই কাজটি করেছেন তাদের আমি চিনতে পারিনি।”
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “সকালের ঘটনাটি আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় যতটুকু শুনেছি, ততটুকুই। তারপর আর কিছু হয়নি। এ নিয়ে কোনো অভিযোগও কেউ করেননি।”