1. bangalirbarta@gmail.com : বাঙ্গালীর বার্তা : বাঙ্গালীর বার্তা
  2. info@www.bangalirbarta.com : বাঙ্গালীর বার্তা :
শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৬:২৭ অপরাহ্ন

ইশরাকের ডিএসসিসি মেয়র শপথ ঘিরে বিতর্ক

আবুল হাসান মুন্সি রাজধানী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১০ মে, ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

বাঙ্গালীর বার্তা: আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তবে এখনও তিনি মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারেননি। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শপথ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে ইশরাক হোসেন গণমাধ্যমে বক্তব্য দিলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি মন্ত্রণালয়। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিধি মোতাবেক গেজেট প্রকাশের ত্রিশ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। তবে আইন অনুযায়ী শপথ নিলেও মেয়াদ কত দিন হবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা নেই মন্ত্রণালয়ের কাছে।

আইন অনুযায়ী যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সম্প্রতি আদালতের আদেশে মেয়র পদ পেয়েছেন ইশরাক হোসেন, সেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এর আগে শপথ গ্রহণ করা মেয়র তাপসের মেয়াদকাল চলতি মাসের ১৫ তারিখ শেষ।

হচ্ছে। তাই বিভিন্ন অঙ্গন থেকে প্রশ্ন উঠেছে, শপথ নিলেও ইশরাক কত দিন মেয়র থাকবেন? আইনজীবীদের মতে, আদালতের যে আদেশে তাকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে; সেই আদেশ যেভাবে বলা আছে সেভাবেই হবে। আদেশে যদি বলা থাকে, রায় ঘোষণার পর সরকারি গেজেট প্রকাশের পর থেকে পরবর্তী ৫ বছর তাহলে তাই হবে। আর যদি ওই নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় তাহলে আগের মেয়রের মেয়াদকালই হবে নতুন মেয়রের মেয়াদকাল। অর্থাৎ ১৫ মে ইশরাকের মেয়াদকাল শেষ হবে।

এদিকে আগামী ১১ মে রবিবার পর্যন্ত সরকারি ছুটি চলমান রয়েছে। ১২ মে সোমবার সরকারি অফিস খুলবে। এক্ষেত্রে সরকার চাইলে ছুটির মধ্যেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। তবে ১২ মে সোমবার পর্যন্ত যদি শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা সরকার না করে তাহলে কি শপথ না নিয়েই মেয়াদকাল শেষ করবেন ইশরাক হোসেনÑ এমন প্রশ্নও উঠেছে। অনেকে বলছেন, তিনি শপথ নিতে পারলে সিটি করপোরেশনের পরবর্তী মেয়র নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ইশরাক হয়তো সে পথেই হাঁটছেন।

শপথ গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইশরাকের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র আমাদের সময়কে জানিয়েছে, ইশরাক ১২ মে পর্যন্ত দেখবেন, সরকার কী ব্যবস্থা নেয়। এরপর প্রয়োজন হলে পুনরায় আদালতের দারস্থ হবেন।

এ বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আমাদের সময়কে বলেন, মেয়র হিসেবে কত দিন থাকতে পারবেন; এটা বলতে হলে দেখতে হবে, যেই রায়ে তাকে মেয়র ঘোষণা করা হলোÑ সেই রায়ে কী বলা আছে। সেখানে যদি বলে, রায় ঘোষণার পর নতুন যে গেজেট প্রকাশ হবে সেই গেজেট অনুযায়ী পরবর্তী পাঁচ বছর; তাহলে সেটাই হবে। তবে যদি তিনি ওই নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী দাবি করেন, তাহলে চলমান মেয়াদই হবে তার মেয়াদ।

আদালতের রায়ের পর নতুন গেজেট অনুযায়ী পরবর্তী মেয়াদকাল হওয়ার সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ক্ষেত্রে এ রকম নজির অতীতে ছিল। মেয়র পদে এখন পর্যন্ত নজির নেই।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী মেয়াদকাল পূর্ণ হওয়ার পূর্বের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে একযোগে দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তা ছাড়া গত বছরের আন্দোলনের তীব্রতা আঁচ করতে পেরে ৩ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ ফজলে নূর তাপস। বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বাদে বাকি ১১টি সিটি করপোরেশনে সরকার নির্ধারিত প্রশাসকদের দিয়ে চলছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়রও আদালতের আদেশে শপথ নিয়েছেন।

এ বিষয়ে যুগ্ম সচিব (সিটি করপোরেশন-১) মাহবুবা আইরিন আমাদের সময়কে বলেন, আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ত্রিশ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে। মেয়াদের বিষয়টা আমরা বলতে পারব না। আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের পর থেকে ত্রিশ দিনের মধ্যে শপথের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।

কীভাবে মেয়র হলেন ইশরাক হোসেন :

আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ এপ্রিল বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী (প্রাপ্ত ভোট চার লাখ ২৪ হাজার) হিসেবে মেয়র ঘোষণা করা হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন পেয়েছিলেন দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। ওই নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ ছিল বিস্তর। তাই নির্বাচন কমিশনের জারি করা গেজেট চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ৩ মার্চ তাপস, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ আটজনকে বিবাদী করে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ইশরাক হোসেন। বিএনপির এই প্রার্থী প্রয়াত বিএনপি নেতা ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। ওই নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল।

নির্বাচন আনুযায়ী সিটি মেয়রের মেয়াদকাল ১৫ মে শেষ হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ইশরাক হোসেন শপথ নিলে কত দিন দায়িত্ব পালন করতে পারবেনÑ জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, এটা সরকার বলতে পারবে। মেয়াদ শেষ হলে শপথ নেবেন কীভাবে? তা ছাড়া নির্বাচন না হলে যিনি দায়িত্ব থাকবেন তিনি পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত থাকবেন কি না সে বিষয়ে বিদ্যমান আইনে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। তাই সরকারই ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবে।

তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিষয়ে অনেকটা কালক্ষেপণ করার পথ খুঁজছে সরকার। নির্বাচন কমিশন থেকে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে গত ২৭ এপ্রিল। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পরদিন ২৮ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে এর আইনি ব্যাখ্যা জানতে চিঠি দেয়। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাননি। তাই ব্যাখ্যাও দেয়নি মন্ত্রণালয়। এ জন্য ইশরাক হোসেন ১২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন। এরপর প্রয়োজনে আবার আদালতের দারস্থ হবেন বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট