1. bangalirbarta@gmail.com : বাঙ্গালীর বার্তা : বাঙ্গালীর বার্তা
  2. info@www.bangalirbarta.com : বাঙ্গালীর বার্তা :
বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ১২:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অনাকাঙ্ক্ষিত অভিযোগের প্রতিবাদ সম্পাদক পরিষদের নির্বাচনে ঋণখেলাপিরা অংশ নিতে পারবে না: অর্থ উপদেষ্টা জাফলংয়ে চলছে পাথরের হরি লুট ‎নির্বাচনের খবরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন: আমীর খসরু জাতীয়করণের দাবিতে এমপিও শিক্ষক/কর্মচারীদের সমাবেশ, যান চলাচলে বিঘ্ন গাজায় দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যার মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে গ্যাস চুক্তি মিশরের বিজিবি’র কাছে আরাকান আর্মির আত্মসমর্পণ, হঠাৎ এই কান্ড কেন? জুলাই সনদে একবিন্দুও ছাড় না, ঐক্য না থাকলে আরেকটি ১/১১ আসবে: নাহিদ পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ৯ সেনা নিহত যৌথবাহিনীর অভিযানে ফেনসিডিলসহ জুলাই যোদ্ধা আটক

বিজিবি’র কাছে আরাকান আর্মির আত্মসমর্পণ, হঠাৎ এই কান্ড কেন?

রাসেল আহমেদ জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

বাঙ্গালীর বার্তা: মিয়ানমারকেন্দ্রিক সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির একজন যোদ্ধা অস্ত্রসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে আত্মসমর্পণের পর কক্সবাজারের উখিয়া থানায় মামলা হয়েছে। অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ কেন আরাকান আর্মির অস্ত্রধারী একজন সদস্য সংঘাতময় এলাকা থেকে পালিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন।

গতকাল মঙ্গলবার সীমান্তসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র সমকালকে বলেছে, আরাকান আর্মির ভেতরের পরিস্থিতিতে ছোটখাটো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া আরাকান আর্মির দখল করা রাখাইনেও কিছু মেরূকরণ হচ্ছে। তবে সেটা এখনই বড় মাত্রার বদল নয়। আরাকান আর্মির আরও সদস্যের আত্মসমর্পণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীদের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এক ধরনের নতুন নীতির কিছু বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি স্পষ্ট হচ্ছে। সামরিক জান্তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অস্ত্র ব্যবসায়ী কয়েকটি সংস্থার ওপর থেকে এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে বিজিবির ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধীন বালুখালী বিওপির ৫ নম্বর পোস্টে আরাকান আর্মির এক সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর নাম জীবন তঞ্চংগ্যা (২১)। তাঁর কাছ থেকে একে-৪৭ রাইফেল, ৫২টি গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জীবন বিজিবিকে জানান, তাঁর বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গর্জবুনিয়া গ্রামে। বাবার নাম চিংমং তঞ্চংগ্যা। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে মিয়ানমারের মংডুতে আরাকান আর্মির ক্যাম্প থেকে তিনি পালিয়ে এসেছেন। আরও ৩০০ আরাকান আর্মির সদস্য ক্যাম্প থেকে পালিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল বিজিবির ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী আরাকান আর্মির সদস্য জীবনকে ও তাঁর কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র উখিয়া থানায় দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জীবন দাবি করেছেন, নিরাপত্তা শঙ্কা ছাড়াও যে মোটিভেশন দিয়ে তাঁকে নেওয়া হয়েছে, সেখানে ধাক্কা খেয়েছেন। এটা সংঘাতময় পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হওয়ার একটা প্রভাব হতে পারে।’

উখিয়া থানার ওসি আরিফ হোসেন সমকালকে বলেন, ‘অস্ত্র মামলায় হেফাজতে এনে জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কীভাবে কার মাধ্যমে সে এই চক্রে জড়াল, তা বের করব আমরা।’

সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন– এমন একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত বছর ডিসেম্বরে মংডু, বুচিডং, রাচিডং টাউনশিপসহ রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দেয় আরাকান আর্মি। এর পর পুরো এলাকা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে তারা। অধিকৃত অঞ্চলকে স্বাধীন ‘আরাকান রাষ্ট্র’ ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। তবে জান্তা বাহিনীর হামলাসহ নানা সংকটে এখনও স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়নি। রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতির মুখে গত এক বছরে এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ঠাঁই নিয়েছে। বর্তমানে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ১৩ লাখের বেশি।

সীমান্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সম্প্রতি রাখাইনে ফের হামলা জোরদার করেছে জান্তা সরকার। দফায় দফায় আরাকান যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে বিমান হামলা। মিয়ানমারের নির্বাসিত সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর খবর অনুযায়ী, ২ মে থেকে পরবর্তী দুই সপ্তাহে জান্তা বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮৬ জন নিহত ও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

সূত্রগুলো বলছে, রাখাইনে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় আরাকান আর্মির সদস্যদের ওপর এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া রয়েছে অর্থ ও খাদ্য সংকট। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সঙ্গে জান্তা সরকারের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। আরকান আর্মিকে কোণঠাসা করতে আরসাকে কাজে লাগাতে চায় জান্তা সরকার। উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং মংডুর বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তের অন্তত ১৩টি স্থানে আরসা ও আরাকান আর্মির তৎপরতা বেড়েছে। এর মধ্যে টাউংপিও লেত্ইয়ার, এনগারাঘ্যুং, বাউতলা-সরিশিং পাড়া, বাউদুল্লা-মাহিতাউং, অকচিলপাড়া, রেজুপাড়া-চৌধুরীপাড়া এবং লেম্বুচড়া-ল্যাংমুইপাড়া বেল্ট উল্লেখযোগ্য।

এদিকে মংডুর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে নিজস্ব জলসীমায় জান্তা বাহিনী নৌশক্তি বাড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, আরসা ও জান্তা বাহিনীর যৌথ আক্রমণের আশঙ্কায় আরাকান আর্মি উত্তর মংডু এলাকায় টহল ও গেট নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করেছে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আরাকান আর্মির অনেক সদস্য দলছুট হচ্ছেন। অর্থ সংকটের কারণে মাদকসহ সীমান্তে চোরাচালানের ওপর ভর করছে আরাকান আর্মি। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাচার করতে মাথাপিছু বড় অঙ্কের টাকাও তারা নিচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটকে পুঁজি করে বাণিজ্য করছে আরাকান আর্মি। অনেক রোহিঙ্গাকে জড়িয়ে মাদকের রমরমা কারবার করছে তারা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ানমার নীতিতে পরিবর্তন স্পষ্ট। দেশটির সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। বাণিজ্যের ব্যাপারে আলোচনা নতুনভাবে এগিয়ে নিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করতে পারবে– এমন বিষয় উল্লেখ করে দেওয়া হয় বার্তা। এ ছাড়া মিয়ানমারের সংঘাতময় এলাকা কাচিন থেকে মূল্যবান খনিজ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও কাচিনে যারা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, সেই সশস্ত্র গ্রুপের কাচিন ইনডিপেনডেন্ট আর্মির (কেআইএ) ওপর চীনের এক ধরনের প্রভাবের কথা অনেক বিশ্লেষক বলে থাকেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ের গবেষক আলতাফ পারভেজ সমকালকে বলেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির এক ধরনের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের তরফে দেখা যাচ্ছে। তবে চীনের সঙ্গে অনেক আগে থেকে মিয়ানমার যেভাবে নানা সম্পর্কে জড়িয়ে আছে, রাতারাতি তা পাল্টে যাবে বলে মনে হয় না। সম্প্রতি চীন আগের তুলনায় জান্তা সরকারকে কিছু বাড়তি সহযোগিতা করছে। তবে এখনই আরাকান আর্মি সংকটে পড়ে গেছে– বিষয়টি এমন নয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট