বাঙ্গালীর বার্তা: সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবক শামীম ইসলাম হত্যার নৃশংস রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় শামীমের ছোট বোন এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশ জানয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—শামীমের ছোট বোন রেশমা খাতুন (২৫), হাফিজা খাতুন (৪২), কারখানার নিরাপত্তাকর্মী গোলাম মোস্তফা (৫৫), সুমন চন্দ্র ভৌমিক (২৮), তপু সরকার (১৯) ও শফিকুল ইসলাম (৪০)।
পুলিশ জানায়, রেশমা খাতুন সিরাজগঞ্জের কুটিরচর এলাকার এসিআই ফুড কারখানায় চাকরি করতেন। সেখানে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীসহ কয়েকজনের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। চলতি বছরের ২ জুলাই রাতে শামীম ওই কারখানায় চুরির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে বোন রেশমাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রেশমা নির্মম হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই রাতে পাশের বাড়ির হাফিজার সহায়তায় শামীমকে কারখানার পাশে ডেকে আনা হয়। সেখানে উপস্থিত গোলাম মোস্তফা ও সুমন তার দুই হাত চেপে ধরে রাখে। পরে শফিকুল ধারালো ছুরি দিয়ে শামীমের বুকে আঘাত করে। শামীম তখনো বেঁচে ছিল। শেষ মুহূর্তে রেশমা নিজ হাতে তার শরীরে অ্যাসিড ঢেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর লাশটি কারখানার পাশের ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনার তদন্তে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সত্যতা পায় এবং একে একে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে। পরে রেশমা, হাফিজা, গোলাম মোস্তফা ও সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইন বলেন, “নিজ বোনকে অনৈতিক কাজে দেখে ফেলায় শামীমকে তারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।”
নিহত শামীম ইসলাম কামারখন্দ উপজেলার কুটিরচর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। গত ২ জুলাই গোসলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। দুই দিন পর ৪ জুলাই সকালে কারখানার ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের গলায় গামছা পেচানো, শরীর অ্যাসিডে ঝলসানো এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে নিহতের বাবা সাইফুল ইসলাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।