1. bangalirbarta@gmail.com : বাঙ্গালীর বার্তা : বাঙ্গালীর বার্তা
  2. info@www.bangalirbarta.com : বাঙ্গালীর বার্তা :
রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ১২:৫৮ অপরাহ্ন

খালেদা জিয়া ফিরছেন কাতার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে

মাহফুজুর রহমান বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

বাঙ্গালীর বার্তা: কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আগামীকাল সোমবার দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চার মাস আগে আমিরের দেওয়া এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন। শারীরিকভাবে আগের চেয়ে সুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেশে নিয়ে আসতে তার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার এবং বোর্ডের আরেক সদস্য আইসিইউ কনসালটেন্ট ডা. জাফর গতকাল শনিবার লন্ডন পৌঁছেছেন।

খালেদা জিয়ার সাথে তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও দেশে ফিরছেন ১৭ বছর পর। সাথে আসছেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমানও।

প্রথমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফেরার কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক যৌথসভা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বেগম খালেদা জিয়া কাতারের যে রয়েল অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে গিয়েছিলেন, সেই অ্যাম্বুলেন্সেই সোমবার দেশে ফিরে আসবেন। তিনি বলেন, সময়টা আমরা এখন নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কারণ, এটা নির্ভর করবে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। এটা যদি আজকে রাতে অথবা কালকে নিশ্চিত হই, আমরা আবার গণমাধ্যমের মাধ্যমে তাা জনগণের কাছে পৌঁছে দেব।

এ বিষয়ে আমাদের লন্ডন প্রতিনিধি গতকাল রাতে জানান, সে সময় পর্যন্ত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি লন্ডনে পৌঁছায়নি। সঙ্গত কারণেই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, ঠিক কখন খালেদা জিয়া দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। ধারণা করা হচ্ছে, লন্ডনের স্থানীয় সময় সোমবার তাকে নিয়ে যাত্রা করবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। সেক্ষেত্রে মঙ্গলবারের মধ্যে দেশের মাটিতে পা রাখবেন বিএনপির এই শীর্ষনেত্রী।

এদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে শৃঙ্খলার সাথে অভ্যর্থনা জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এ নিয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে এক যৌথসভা করে দলটি।

এর আগে গত শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন সোমবার বেলা ১১টায়। বিমানের এই ফ্লাইটটি সিলেট হয়ে ঢাকায় পৌঁছবে। কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে বিএনপির তরফ থেকে দুই সপ্তাহ আগে যোগাযোগ করা হয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও বিষয়ে জানানো হয়। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পেতে বিলম্ব হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বাংলাদেশ বিমানে দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সেই অনুযায়ী সোমবার বিজি-২০২ ফ্লাইটে খালেদা জিয়াসহ তার দুই পূত্রবূধ এবং অন্যান্য সদস্যদের টিকিটসহ সব প্রস্তুতিও শেষ করা হয়।

এদিকে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গড়ে তোলা হবে এ নিরাপত্তাবলয়। ঝুঁকি বিবেচনায় ডা. জুবাইদা রহমানকেও বিশেষ নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গতকাল বিকালে আমাদের সময়কে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশেষ নিরাপত্তার সঙ্গে তাকে বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবনে (ফিরোজা) পৌঁছে দেওয়া হবে। এর প্রস্তুতি নিয়ে রোববার (আজ) বিকালে ডিএমপি সদর দপ্তরে এক সভার আয়োজন করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক এক প্রশ্নে পুলিশ কমিশনার বলেন, ঝুঁকি বিবেচনায় ডা. জুবাইদা রহমানকেও বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা দেওয়া হবে।

খালেদা জিয়াকে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নং বিজি-২০২ লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার কথা ছিল আজ রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি কাতার আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে জানা যায়, খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর টারমাকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে বিএনপির শীর্ষনেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে ৮নং গেট দিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর গুলশানের উদ্দেশে রওনা হবে। বিমানবন্দর মোড় থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে তাদের প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাবেন।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) একেএম শামসুল ইসলাম শামস বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তাসহ অভ্যর্থনার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করছেন।

এদিকে হিথ্রো বিমানবন্দরে মাকে বিদায় জানাবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই পুত্রবধূ ছাড়াও তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হকও থাকবেন।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসার পর ২৫ জানুয়ারি তিনি তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অর্ধ যুগের বেশি সময় পর লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গত ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগার ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

জুবাইদা রহমানকে বিশেষ নিরাপত্তা

ডা. জুবাইদা রহমানের নিরাপত্তা ‘নিশ্চিত করতে’ গত ৩০ এপ্রিল পুলিশের আইজিকে চিঠি দেয় বিএনপি। চিঠিতে তার বাসভবনের পাশাপাশি বাইরে চলাফেরার ক্ষেত্রেও ‘গাড়িসহ পুলিশি নিরাপত্তা’ চাওয়া হয়। জুবাইদা রহমান ধানমন্ডিতে তার বাবার বাড়িতে উঠবেন জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, জিয়া পরিবারের সদস্য ও তারেক রহমানের স্ত্রী হিসেবে তার জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। সে কারণে তার ঢাকার বাসায় অবস্থানের সময় এবং যাতায়াতের সময় নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। ওই চিঠিতে চার ধরনের নিরাপত্তা চাওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- সশস্ত্র ‘গানম্যান’, গাড়িসহ ‘পুলিশ প্রটেকশন’, বাসায় পুলিশি পাহারা এবং বাসায় আর্চওয়ে স্থাপন। জুবাইদা রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আমাদের সময়কে বলেন, প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সে অনুযায়ী আমরা উনাকে অবশ্যই নিরাপত্তা দেব।

নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপির নির্দেশনা ও জনসাধারণের প্রতি আহ্বান

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আমাদের আহ্বান- অত্যন্ত শৃঙ্খলার সাথে রাস্তার দুই ধারে কোনো যানজট সৃষ্টি না করে তারা দেশনেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। এক হাতে জাতীয় পতাকা, আরেক হাতে বিএনপির পতাকা নিয়ে আমরা নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাব- এটা হচ্ছে আমাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের নেতারা দায়িত্ব নিয়েছেন তারা শৃঙ্খলা বজায় রেখে যাতে নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে পারেন, সেই ব্যবস্থা তারা করবেন। এ ছাড়া তিনি বলেন, জনগণের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে- এই ফ্লাইটটি আসার পর অথবা আগে আ্যলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেটা আছে, তারা যেন সেই পথটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। আমার বিশ্বাস জনগণ সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করবেন এবং তারা তাদের প্রিয় নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যবস্থা করবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট