বাঙ্গালীর বার্তা: ২০১৩ সাল থেকে শ্রীলংকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। হার দিয়ে শুরু সেখানে। এরপর দেশটির বিপক্ষে কখনো এই সংস্করণে সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে একবার হয়েছিল ড্র। সেই পরাজয়ের বৃত্ত থেকে এবার বের হলো বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারাল লংকানদের। তাও আবার তাদের মাটিতেই!
টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হারের ক্ষত কিছুটা হলেও পূরণ করল বাংলাদেশ। এই সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি সিরিজও শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। তবে শেষ দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় লিটন দাসের দল।
স্বাগতিকদের আজ স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শেখ মেহেদি হাসানের তোপে মাত্র ১৩২ রানেই থামে শ্রীলংকা। জবাব দিতে নেমে তানজিদ হাসান তামিমের ফিফটিতে ২১ বল ও ৮ উইকেট বাকি থাকতেই ম্যাচ ও সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
১৩৩ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নুয়ান থুসারার করা ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারান পারভেজ হোসেন ইমন। তবে হোঁচট খাওয়ার গল্প ওখানেই শেষ। ইনিংসের বাকি সময়ে চলেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং আধিপত্য। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক লিটন দাসকে নিয়ে ৭৪ রানের জুটি গড়েন তানজিদ। যেখানে লিটনের অবদান ২৬ বলে ৩২ রান। জয়ের জন্য বাকি পথটুকু তাওহিদ হৃদয়কে নিয়েই পাড়ি দেন তানজিদ।
আজ চারের চেয়ে ছক্কার দিকেই যেন বেশি মনোযোগ ছিল তানজিদের। ৪৭ বলে ৫৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলা পথে বাংলাদেশের এই ওপেনার ছক্কাই হাঁকান ৬টি। যেখানে চারের সংখ্যা মাত্র ১টি। আরেক পাশে তাওহিদ হৃদয় অপরাজিত থাকেন ২৫ বলে ২৭ রানে।
সাফল্যের উল্লাস শরিফুলের
এর আগে, টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নিলেও শেখ মেহেদির তোপে পড়ে ১৩২ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে প্রথম ৫ বলেই ১৪ রান নিয়ে দারুণ সূচনার ইঙ্গিত দেয় লংকানরা। তবে ওভারের শেষ বলে কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় ওভারেই বোলিংয়ে আসেন শেখ মেহেদি। ওভারের পঞ্চম বলে তিনি ফেরান কুশল পেরেরাকে। দলীয় পঞ্চম ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আবারও মেহেদির উইকেট। এবার শিকার বানান অভিজ্ঞ দিনেশ চান্ডিমালকে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান তোলে স্বাগতিকরা।
পাওয়ার প্লে শেষ হলেও শ্রীলংকাকে স্বস্তি দেননি মেহেদি। কোটার তৃতীয় ওভার করতে এসে আউট করেন দলটির অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কাকে। দলীয় ১১তম ওভারে ব্যক্তিগত চতুর্থ ও শেষ ওভার করেন মেহেদি। আগের তিন ওভারের মতো এই ওভারেও উইকেটশূন্য থাকতে হয়নি এই স্পিনারকে। এবার আউট করেন উইকেটে টিকে যাওয়া ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে। একপাশ আগলে রেকে ৩৯ বলে ৪৬ রান করেন নিশাঙ্কা। দলীয় সর্বোচ্চ রান এটিই।
শেষ ওভারে শ্রীলংকার হয়ে ব্যাটে ঝড় তোলেন দাসুন শানাকা। শরিফুল ইসলামের করা ওই ওভারে দুই চার ও দুই ছক্কাসহ তুলে নেন ২২ রান। লংকানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস (২৫ বলে ৩৫) খেলেন তিনিই। তাতে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩২ রানের সংগ্রহ পায় লংকানরা। কোটার ৪ ওভার পূর্ণ করে ১৭ রানের বিনিময়ে ১টি উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজ। অন্যদিকে, ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন শেখ মেহেদি।